তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

Share on:
তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় হলো এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদেকের আগ পর্যন্ত। তবে তাহাজ্জুদ আদায়ের সর্বোত্তম সময় হলো রাতের শেষ অংশ। অথবা ফজরের নিকটবর্তী সময়, যে সময়টা রাতের এক তৃতীয়াংশ।

তাহাজ্জুদ নামাজ নফল নামাজ হলেও এটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ নামাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন। তিনি সাহাবাদেরকেও তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার জন্য উৎসাহিত করতেন। তাহাজ্জুদ নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে। তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীরা কেয়ামতের দিন বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। এ নামাজের পর দোয়া কবুল হয়। প্রতি রাতে তাহাজ্জুদের সময় আল্লাহ তায়ালা প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং বান্দার ফরিয়াদ শোনেন। তাই এই সময় দোয়া করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়, রাকাআত

ইশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদেকের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যায়। তবে অর্ধ রাতের পর থেকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ভালো। শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা সর্বোত্তম।

তাহাজ্জুদ নামাজ দুই থেকে বারো রাকাত পর্যন্ত পড়ার বর্ণনা পাওয়া যায়। সর্বনিম্ন দুই রাকাত এবং সর্বোচ্চ বারো রাকাত। রাসুলুল্লাহ (সা.) আট রাকাত তাহাজ্জুদ পড়তেন। তাই আট রাকাত তাহাজ্জুদ পড়াই ভালো। তবে এটা পড়া আবশ্যক নয়।

তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাত সংখ্যা নিম্নরূপ:

  1. সম্ভব হলে বারো রাকাত তাহাজ্জুদ আদায় করা।
  2. সম্ভব না হলে আট রাকাত আদায় করা উত্তম।
  3. সম্ভব না হলে চার রাকাত আদায় করা।
  4. সম্ভব না হলে দুই রাকাত হলেও তাহাজ্জুদ আদায় করা ভালো।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত মনে মনে করতে হয়। আরবি নিয়ত না পারলে বাংলায়ও নিয়ত করা যায়।

আরবি নিয়ত : نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ رَكْعَتَيْ التَّهَجُّدِ سُنَّةً لِلَّهِ تَعَالَى

উচ্চারণ: “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া রাকআতাইত তাহাজ্জুদি সুন্নাতাল্লাহি তা’আলা”

অর্থ: আমি আল্লাহর ওয়াস্তে তাহাজ্জুদ নামাজের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায়ের নিয়ত করছি।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

তাহাজ্জুদ নামাজ দুই রাকাত দুই রাকাত করে পড়া হয়। তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত করার পর, তাকবীরে তাহরীমা বলে, সুরা ফাতেহা পড়া হয়। এরপর সুরা মিলানো হয়। সুরা মিলানোর ক্ষেত্রে, যেকোনো সুরা বা আয়াত পড়া যায়। তবে দীর্ঘ কেরাত পড়া ভালো।

তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাআতগুলোর মধ্যে রুকু, সেজদা, তাশাহহুদ, দরূদ শরীফ এবং দোয়া মাছুরা পড়া হয়।

তাহাজ্জুদ নামাজের শেষে, সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন হয়।


তাহাজ্জুদ নামাজের হাদিস

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে কয়েকটি হাদিস নিম্নরূপ:

1. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে এবং তাঁর রহমত লাভ করে।” (তিরমিযি, হাদিস নং: ৩৫০০)

2. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে, সে যেন বরকতপূর্ণ সম্পদ লাভ করল।” (আবু দাউদ, হাদিস নং: ১২৯৮)

3. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীদের জন্য জান্নাতের আটটি দরজা উন্মুক্ত থাকে।” (বুখারী, হাদিস নং: ১১৪৫)

4. রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীদের গুনাহ মাফ হয়।” (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং: ১৩২৩)

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

  1. তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীরা কেয়ামতের দিন বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন।
  2. তাহাজ্জুদ নামাজের পর দোয়া কবুল হয়।
  3. তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেন।
  4. তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীদের গুনাহ মাফ হয়।

তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা।

উপসংহার

তাহাজ্জুদ নামাজ ,খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীরা কেয়ামতের দিন বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। এই আর্টিকেলে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি তাহাজ্জুদ নামাজের সময়, তাহাজ্জুদ নামাজের সময়, রাকাআত, তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত, তাহাজ্জুদ নামাজের হাদিস, তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত । আমাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ার করবেন অবশ্যই I

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site is protected by reCAPTCHA and the Google Privacy Policy and Terms of Service apply.

Related Posts

Disclaimer: All trademarks, logos, images, and brands are property of their respective owners. If you have any opinion or request or you find any bug/issues, please Contact Us